আওয়ামী লীগ কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার করে না : ওবায়দুল কাদের

0 ১৬৮
ফাইল ছবি

(বাসস) : আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ওসেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ কোন চাপের কাছে নতি স্বীকার করে না, করবে না।
আজ বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পের (বিআরএসপি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে বিদেশি চাপ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশ কোন দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেনি। অন্য দেশেরও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ যুক্তিযুক্ত মনে করি না। বেগম খালেদা জিয়ার বিষয়টি আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বেগম জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে যতটা না তারা উদ্বেগ করেছে, তাকে নিয়ে রাজনীতির চর্চা করেছে বেশি। যখন বেগম খালেদা জিয়ার বিচার চলছিল তখন অহেতুক অনুপস্থিত থেকে বিচারকে বিলম্বিত করতে চেয়েছে। এমন কোন আইনি লড়াই ও আন্দোলন করতে পারেনি যেটা চাপ সৃষ্টি করতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্র নিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, সেখানে ৬ জানুয়ারি গণতন্ত্রের নামে কি হলো? ৬ টি প্রাণ গেল। ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো নির্বাচনে পরাজয় মেনে নেননি।
তিনি বলেন, সবাই মুখে যে গনতন্ত্রের কথা বলছে, বাস্তবে গনতন্ত্রের প্রাতিষ্ঠানিক রুপ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কিছু না কিছু ত্রুটি আছে। আমাদের গণতন্ত্রও সম্পূর্ণ ত্রুটিমুক্ত বলছি না। ত্রুটিমুক্ত করার চেষ্টা করছি। নির্বাচন কমিশনকে আইন করে স্বাধীন করা হয়েছে।
বিএনপিকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বান জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনি কতটা জনপ্রিয় প্রমাণ করতে হলে নির্বাচনে আসতে হবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগবেগম জিয়াকে জেলে রেখেছে, তত্ত্বাবধায়ক বাদ দিয়েছে- বিএনপির দুটি অভিযোগই মিথ্যা।
ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুল নিজে ব্যর্থ। সবার আগে বিএনপি নেতৃত্বের টপ টু বটম পদত্যাগ করা দরকার। দৃশ্যমান কোন আন্দোলন তারা করতে পারেনি। বিএসপির ভেতরে গনতন্ত্রের চর্চা নেই, দেশের গণতন্ত্র আনবে কিভাবে।
জামায়াতে ইসলামি সম্পর্কে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিষয়টি উচ্চ আদালতে আছে। চূড়ান্ত রায় আসেনি। সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে না। দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামিকে নিষিদ্ধ করার দাবি আছে। দলটির নিবন্ধন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন।
জাতিসংঘে মানবাধিকার কমিশনের টিঠি সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, আমরা কি জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের কথা ওপ্রেসক্রিপশন অনুযায়ী চলি?
এর আগে রোড সেফটি অনুষ্ঠানে বক্তব্যে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংক ইচ্ছে করলে পদ্মা সেতুতে জড়িত থাকতে পারত। এখানে একটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। তবে এজন্য শুধু বিশ্বব্যাংককে দায়ী করা যাবে না। এর সঙ্গে আমাদের দেশের কিছু বাঘা বাঘা ব্যক্তিও জড়িত ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিশ্বব্যাংকযে সম্মান দেখিয়েছে এবং বাজেটে যে সহযোগিতা করেছে তার জন্য বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানান তিনি।
সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে নিজের অস্বস্তির কথা জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এত উন্নয়নের পরও সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে পারছি না- এটা আজকে প্রশ্ন। সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বার্ষিক ক্ষতি হয়। আমাদের ভাবনা অনেক সুদূরপ্রসারী। কিন্তু বাস্তবায়ন খুবই ধীর।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে শেখ হাসিনা সরকারের আমলে যোগাযোগ ব্যবস্থা, বিশেষ করে সড়কযোগাযোগ ব্যবস্থার যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে, এটা একটা বিরাট অর্জন।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশের সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের  অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন। পরে সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে প্যানেল আলোচনা করেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি অপরাধ ও অপারেশন আতিকুল ইসলাম, বিআরটিএ চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশে বিশ্বব্যাংকের রোড সেফটি প্রজেক্টের সিনিয়র ট্রান্সপোর্টস্পেশালিষ্ট দীপন বোস।
এছাড়া সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব এবিএম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে রোড সেফটি নিয়ে  অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব শরিফা খান, বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ট্রান্সপোর্ট প্রাকটিস ম্যানেজার ফেই ডেং, বাংলাদেশ ও ভারতের কান্ট্রি ডিরেক্টর আব্দুলায়ে সেক, বিশ্বব্যাংকের ইনফ্রাস্ট্রাকচার ভাইসপ্রেসিডেন্ট গুয়ানজে চেন।
বিশ্বব্যাংক ও বাংলাদেশ সরকারে যৌথ অর্থায়নে প্রকল্পটিতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা।

Leave A Reply

Your email address will not be published.